ডিটেকটিভ স্পোর্টস ডেস্ক
কোন অঘটন ঘটতে দেয়নি ব্রাজিল। গ্রুপপর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে সার্বিয়াকে ২-০ গোলে হারিয়ে গ্রুপচ্যাম্পিয়ন হয়ে শেষ ষোলতে উঠেছে তারা। ব্রাজিলের হয়ে গোল পেয়েছেন পাউলিনহো ও থিয়াগো সিলভা। শেষ ষোলতে তাদের প্রতিপক্ষ ‘এফ’ গ্রুপের রানার্স আপ মেক্সিকো। এদিকে দিনের অন্য খেলায় কোস্টা রিকার সাথে ২-২ গোলে ড্র করে ‘ই’ গ্রুপের রানার্স আপ হয়েছে সুইজারল্যান্ড। শেষ ষোলতে তাদের প্রতিপক্ষ সুইডেন।
বুধবার অঘটনের ঝড় উঠিয়ে রাশিয়ার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিয়েছে জার্মানি। বিশ্বকাপের ইতিহাসের সফল দুইটি দলের একটি তারা। অন্য দল ব্রাজিল। তাই শঙ্কা কিছুটা জেগেছিল সার্বিয়া-ব্রাজিল ম্যাচ ঘিরেও। কিন্তু সব শঙ্কা উড়িয়ে শেষ ষোলতে উঠেছে নেইমাররা। সার্বিয়াকে হারিয়েছে তারা ২-০ গোল।
এবারের আসরের ফেভারিট দল হিসেবেই রাশিয়া গিয়েছে তিতের শিষ্যরা। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ২ নম্বরে থেকে। কিন্তু প্রথম ম্যাচে ড্র করে বড় ধাক্কা খায়। যদিও দ্বিতীয় ম্যাচে কোস্টা রিকাকে হারায় ২-০ গোলে। কিন্তু দলের সার্বিক পারফরম্যান্সে কিছুটা হতাশাই চোখে পড়েছিল। তাই ঘুরে দাঁড়ানোর ম্যাচে চিরচেনা আক্রমণাত্মক ভঙ্গি নিয়েই খেলে ব্রাজিল।
শুরু থেকেই সার্বিয়ার ওপর দারুণ চাপ সৃষ্টি করে খেলে গোলের জন্য মরিয়া নেইমাররা। কিন্তু ব্রাজিলের আক্রমণকে ভালোভাবেই সামলিয়েছে সার্বিয়া। এবং করেছে পাল্টা আক্রমণ। যদিও বল দখলের লড়াইয়ে এগিয়ে ছিল ব্রাজিলই। তবে ম্যাচের দশম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় ব্রাজিল। চোট পেয়ে মাঠ ছাড়েন মার্সেলো। তার জায়গায় নামেন ফিলিপে লুইস। ম্যাচের ২৫ মিনিটেও দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু নেইমারের শট ঠেকিয়ে সে যাত্রায় সার্বিয়ানদের রক্ষা করেছিলেন গোলকিপার ভ্লাদিমির স্তয়কোভিচ।
ব্রাজিলকে প্রথম গোলটি পেতে অপেক্ষা করতে হয় ম্যাচের ৩৬ মিনিট পর্যন্ত। এসময় ফিলিপে কুতিনহো দারুণ একটি লঙ পাস দেন এগিয়ে থাকা পাউলিনহোর দিকে। আর বল পেয়ে দুই ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে প্রতিপক্ষে গোলকিপারকে ফাঁকি দিয়ে গোল করেন পাউলিনহো। ১-০ গোলের ব্যবধান নিয়ে শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে আক্রমণের ধার ধরে রাখে ব্রাজিল। কিন্তু পরিস্থিতি সামলিয়ে পাল্টা আক্রমণে যায় সার্বিয়াও। টানা আক্রমণ করে ব্রাজিলের রক্ষণে ভয় ধরিয়ে দেয় একসময়। তবে তা কাটিয়ে ফের আক্রমণে যায় ব্রাজিল। এসময় ম্যাচের ৬৮ মিনিটে কর্নার পায় ব্রাজিল। কর্নার কিক নেন নেইমার। সেই কিক থেকে হেডে দলের হয়ে দ্বিতীয় গোলটি করেন থিয়াগো সিলভা। তখনই মূলত ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত হয়ে যায়।
এদিন খোলস ছেড়ে অনেকটাই বেরিয়ে আসেন নেইমার। যদিও গোল পাননি তিনি। কিন্তু ব্রাজিলের আক্রমণভাগের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনিই। বাম দিক থেকে ব্যতিব্যস্ত রেখেছেন সার্বিয়ার রক্ষণভাগকে। এদিন দুর্ভাগ্য এসে ভর করে। না হলে বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ কি করে মিস করেন বিশ্বের সবচেয়ে দামী এই ফুটবলার।
এ জয়ের ফলে টানা ১৩টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে উঠেছে ব্রাজিল। আর ব্রাজিলের হয়ে খেলা ১৮ ম্যাচে ১৯ গেলে অবদান রেখেছেন নেইমার। যারমধ্যে ১০টি গোল ও ৯টি অ্যাসিস্ট করেছেন তিনি। সিলভার গোলটি এসেছে নেইমারের অ্যাসিস্ট থেকে। গেল বিশ্বকাপেও নেইমারের অ্যাসিস্ট থেকেই গোল পেয়েছিলেন সিলভা। আর পাউলিনহোর প্রথম গোলে অ্যাসিস্ট ছিল কুতিনহোর। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বকাপে ব্রাজিলের ৩টি গোলে (২ গোল ও ১ অ্যাসিস্ট) অবদান রাখলেন বার্সেলোনার এই তারকা।